ঢাকা,শুক্রবার, ৩ মে ২০২৪

নাইক্ষ্যংছড়িতে স্কুল ছাত্রী ধর্ষণ : মাদরাসা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ভিতরে তদন্ত বাইরে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন

বিশেষ প্রতিবেদক, নাইক্ষ্যংছড়ি ::   নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার মদিনাতুল উলুম মডেল ইনস্টিটিউট আলীম মাদরাসার অধ্যক্ষ ছৈয়দ হোসেনের পদত্যাগ দাবীতে আন্দোলনে নেমেছেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

আজ সোমবার (২২জুলাই) দুপুর দেড়টায় অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে তদন্ত চলাকালে ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-কর্মচারী, অভিভাবক ও সচেতন নাগরিক সমাজ নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা পরিষদের সামনে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন। এসময় তারা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নারী কেলেংকারী, জালিয়াতি, অনিয়ম, দূর্নীতির অভিযোগ এনে তার পদত্যাগের দাবী জানান।

মানববন্ধন ও আন্দোলনে মাদরাসার ১৪জন শিক্ষকের মধ্যে ১২জন শিক্ষকসহ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ একাত্বতা প্রকাশ করেন। এসময় আন্দোলনকারীরা বিভিন্ন ফেস্টুন হাতে নিয়ে অধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবীতে শ্লোগান দেন।

অধ্যক্ষের অপকর্ম ও তার নানা অনিয়ম, দূর্নীতির ফিরিস্তি তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন মাদরাসা উপাধ্যক্ষ মাওলানা আবু বক্কর, সিনিয়র শিক্ষক তাজিম উদ্দিন, ছৈয়দুল বাশার, মাওলানা আবু বক্কর ছিদ্দিক, মোক্তার আহমদ, মো: ইছহাক, মাওলানা হাবিবুল্লাহ, রোখসানা আক্তার বেগম, ইজ্জল আলী, গিয়াস উদ্দিন, সাখাওয়াত হোসেন শ্রমিকলীগ সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন শিমুল প্রমুখ।

বক্তারা অনতিবিলম্বে বির্তকিত অধ্যক্ষকে অপসারনের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি দাবী জানিয়ে বলেন- অধ্যক্ষের বির্তকিত বিষয়ে প্রশাসন আন্তরিক হলেও কমিটির কতিপয় নেতা ও বর্তমান অধ্যক্ষ বহাল থাকায় মাদরাসার পরিস্থিতি উন্নতির কোনো সম্ভাবনা নেই। তাই তাঁর পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। অধ্যক্ষের চারিত্রিক স্খলনজনিত কারনে মাদরাসার পুরো শিক্ষক সমাজ আজ প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছে।

পরে আয়োজকরা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সরেজমিন তদন্তে থাকা জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের সঙ্গে সাক্ষাত করে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।

অনিয়ম দূর্নীতির তদন্ত: এদিকে মাদরাসা অধ্যক্ষ ছেয়দ হোসেন সম্প্রতি নিজ প্রতিষ্ঠানের ছাত্রীর সাথে অনৈতিক সম্পর্ক, কমিটি গঠনে জেলা প্রশাসকের পত্র জালিয়াতি, অনিয়ম, দূর্নীতি ও শিক্ষকদের সঙ্গে বিবাদসহ নানা অপকর্মের বিষয়ে দ্বিতীয়বারের মতো তদন্ত করেছেন জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সুমা রানী দে। সোমবার দুপুরে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে প্রকাশ্যে তদন্তকালে অধ্যক্ষ ছৈয়দ হোসেন জেলা প্রশাসকের পত্র জালিয়াতির বিষয় স্বীকার করেন। এসময় মাদরাসার শিক্ষক ও মাদরাসা কমিটির নেতারাও অধ্যক্ষ ছৈয়দ হোসেনের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ তুলে ধরেন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো: শফিউল্লাহ, থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনোয়ার হোসেন, সদর ইউপি চেয়ারম্যান তসলিম ইকবাল চৌধুরী, উপজেলা শ্রমিকলীগ সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন শিমুল প্রমুখ।

এসময় থানা অফিসার ইনচার্জ বলেন- ছাত্রীকে বিয়ে করা মানে অপরাধ শেষ হয়ে যায়নি। এতে করে অন্যান্য ছাত্রীরা আতংকে থাকবে। জনবিষ্ফোরন যাতে না হয় সেজন্য অপরাধীর বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে ব্যবস্থা নিতে হবে।

তদন্তের বিষয়ে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সুমা রানী এই প্রতিবেদককে বলেন- মাদরাসার শিক্ষক, কমিটির সদস্য, জনপ্রতিনিধিবৃন্দের অভিযোগ সমূহ শুনেছি। প্রাথমিকভাবে অধ্যক্ষের নানা অনিয়মের বিষয়ে তুলে ধরেছেন তারা। তদন্ত উঠে আসা প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন বিভাগে পাঠানো হবে।

পাঠকের মতামত: